Know the food list of heart patients:/হৃদরোগীদের খাদ্য তালিকা জেনে নিন:

হৃদরোগীদের খাদ্য তালিকা জেনে নিন:

দেহের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল হৃৎপিণ্ড। তাই আমাদের উচিত শরীরের সমস্ত অংশের পাশাপাশি হৃৎপিণ্ডকে খুব যত্নে রাখা। সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবন-যাপন এবং সঠিক খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমেই একজন মানুষের হৃদরোগ হওয়ার ঝুঁকি কম থাকে। অবশ্যই হার্ট ভালো রাখতে হলে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি।

হৃদরোগ হওয়ার কারণ:

হৃদরোগ বলতে সাধারনভাবে হৃৎপিন্ড, রক্তবাহী ধমনী ও শিরা, মস্তিষ্ক ও বৃক্ক সম্পর্কিত রোগকে বোঝায়। হৃদরোগের অনেক কারণের মধ্যে উচ্চ রক্তচাপ ও অ্যাথেরোসক্লোরোসিস প্রধান। বয়সের সঙ্গে হৃৎপিন্ড ও ধমনীর গঠনগত পরিবর্তনও হৃদরোগের জন্য অনেকাংশে দায়ী।নিম্নে আরো কিছু বিষয় জেনে নেওয়া যাক:

1. ধূমপান: হৃদরোগ হওয়ার পেছনে ধূমপানের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যে ব্যক্তি নিয়মিত ধূমপান করে থাকেন তার হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করার ঝুঁকি থাকে।

2. উচ্চ রক্তচাপ: উচ্চ রক্তচাপ করোনারি হৃদরোগের একটি মারাত্মক রিস্ক ফ্যাক্টর। অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ হৃদপিন্ডের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।

3. রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রার আধিক্য: রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রার আধিক্য হৃদরোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ রিস্ক ফ্যাক্টর।

4. ডায়াবেটিস: হৃদরোগ হওয়ার পেছনে ডায়াবেটিসের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দীর্ঘদিনের ডায়াবেটিস হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।

5. অতিরিক্ত ওজন এবং মেদস্থূলতা: অধিক ওজন হলে শরীরে রক্ত সরবরাহ করতে হৃদপিণ্ডের অধিক কাজ করতে হয়। যার ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

6. শারীরিক পরিশ্রমের অভাব: শারীরিকভবে নিস্ক্রিয় লোকদের হৃদরোগ হওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। অলস জীবন-যাপন করোনারি হৃদরোগের জন্য আরেকটি রিস্ক ফ্যাক্টর।

এছাড়াও বিভিন্ন করণে হৃদরোগ হতে পারে। তাই আমাদের সকলের উচিত স্বাস্থ্য বিষয়ক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, ওযেবসাইড এবং হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের পরামর্শ নিতে হবে।

হৃরোগীদের খাদ্য তালিকা:

বেচে থাকার জন্য অবশ্যই আমাদের কিছু খাদ্য অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। যা আমাদের সুস্থ জীবনের জন্য অবশ্যই জরুলী:


যেসব খাবার হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। যেমন -

* গ্রিন টি : গ্রিন টিতে ক্যাটেচিন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের পরিমাণ বেশি পরিমাণে থাকে যা হৃদরোগের বিরুদ্ধে লড়াই করে। নিয়মিত গ্রিন টি পান করলে হৃৎপিণ্ড সুস্থ থাকে।

* রসুন : রসুন হার্টের জন্য অনেক ভালো। নিয়মিত রসুন ব্লাঞ্চিং ( গরম পানিতে ২ মিনিট ফুটানো) করে খেলে অথবা তরকারিতে আস্ত রসুন খেলে হার্ট সতেজ থাকে।

* ডার্ক চকলেট : ডার্ক চকলেট মস্তিষ্কের নার্ভ সিস্টেমকে সতেজ রাখে; ফলে হাইপারটেনশন বা হৃদরোগের ঝুঁকি কমে।

* সবুজ শাক-সবজি ও সালাদ : সবুজ শাক-সবজি ও সালাদে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, মিনারেলস, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা হার্টের জন্য ভালো।

* মাশরুম : মাশরুমে এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও প্রোটিন আছে যা হার্ট অ্যাট্যাকের পাশাপাশি ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।

* সামুদ্রিক মাছ : সামুদ্রিক মাছে ওমেগা ৩ ও ওমেগা ৬, ভিটামিন ডি ইত্যাদি আছে। নিয়মিত সামুদ্রিক মাছ গ্রহণে হার্ট সুস্থ থাকে।

* ওমেগা ৩ ও ওমেগা ৬ যুক্ত ওয়েল : যেকোনো ভেজিটেবল তেল বিশেষ করে  যেসব তেলে ওমেগা ৩ আছে সেসব তেল হার্টের জন্য ভালো। যেমন- অলিভ ওয়েল, ক্যানোলা ওয়েল, সানফ্লাওয়ার ওয়েল, সরিষার তেল এগুলোতে PUFA আছে অর্থাৎ পলি আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি এসিড যা হার্টের জন্য ভাল।

* কাঠবাদাম : কাঠবাদাম মস্তিষ্কের বুদ্ধি বৃদ্ধির পাশাপাশি হার্ট ভালো রাখে।

* ব্ল্যাক কফি : ব্ল্যাক কফিতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে যা নার্ভ সিস্টেমকে নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি হার্ট সতেজ রাখে।

* আদা : আদাতেও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে যা হার্টকে সুস্থ রাখে। নিয়মিত আদা চা, আদা পানি খাওয়া যেতে পারে।

* ডিমের সাদা অংশ : ডিমের সাদা অংশে ওমেগা ৩ আছে  যা হার্টের জন্য ভালো। তবে অনেকের মধ্যে ভুল ধারণা আছে যে ডিমের কুসুম হার্টের জন্য খারাপ। একজন হৃদরোগী সপ্তাহে অন্ততপক্ষে ৪ দিন সকালে কুসুমসহ ডিম সিদ্ধ খেতে পারবেন। এতে কোনো স্বাস্থ্যঝুঁকি নেই।

* তরল ও নরম খাবার : কম তেল ও মশলাযুক্ত যেকোনো তরল খাবার যেমন ভেজিটেবল স্ট্যু, স্যুপ, ব্ল্যাক চা, ঝোলের তরকারি, লাল চিড়া, ওটমিল ইত্যাদি হার্টকে সুস্থ রাখে।

* টকফল : যেকোনো টক জাতীয় ফল বিশেষ করে আমলকী, লেবু, মালটা ইত্যাদি হার্ট অ্যাট্যাকের ঝুঁকি কমায়।

এমন অনেক খাবার আছে যেগুলো হার্টের জন্য খারাপ যেমন -

* অতিরিক্ত তেল ও চর্বিযুক্ত খাবার রক্তের সাথে মিশে ধীরে ধীরে হার্ট ব্লক করে।

* গরুর মাংস, মাংসের চর্বি, চিংড়ি মাছ বিশেষ করে চিংড়ি মাছের মাথায় ক্ষতিকারক কোলেস্টেরল থাকে যা দিনের পর দিন গ্রহণে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়।

* অতিরিক্ত লবণ ও চিনি হার্ট ফাংশনকে ড্যামেজ করে।

* সোডা জাতীয় খাবার, প্রসেসড ফুড, আচার, হ্যাম, সসেজ, কোল্ড ড্রিংকস হার্টের জন্য ক্ষতিকর।

* ধূমপান ও মদ্যপানে হৃদরোগের মারাত্মক পর্যায়ে যাওয়ার পাশাপাশি ক্যান্সার হয়।

শুধুমাত্র খাবারের মাধ্যমেই যে হার্টকে ভাল রাখা যায় তা নয়। এর পাশাপাশি নিয়মিত হাঁটতে হবে, ব্যায়াম করতে হবে এবং অবশ্যই সবসময় হাসিখুশি থাকতে হবে।


Post a Comment

0 Comments